দক্ষিণ দিনাজপুর: জুতোপেটা আন্দোলন নিয়ে ক্ষোভে ফুসছে বালুরঘাট। সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস শিক্ষা সেল-এর "জুতোপেটা" আন্দোলনে নিন্দার ঝড় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে। উল্লেখ নিট কেলেঙ্কারির প্রতিবাদে ২৫শে জুন বালুরঘাটের রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল ও বিক্ষোভ সভা করে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষা সেল। ওয়েবকুপা, পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি ও পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য নেতৃত্বের উপস্থিতিতে বালুরঘাট হয় এই বিক্ষোভ মিছিল ও বিক্ষোভ সভা। মিছিলে নেতৃত্ব দেন খোদ ওয়েবকুপা সংগঠনের রাজ্য সহ সভাপতি মনিশংকর মন্ডল। মিছিল চলাকালীন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, শিক্ষা মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এবং শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা বালুরঘাটের অধ্যাপক সাংসদ ড: সুকান্ত মজুমদার-এর কুশপুত্তলিকা দাহ করার পাশাপাশি প্রতিকৃতি কুশপুত্তলিকাগুলিতে জুতোপেটা, লাথি মারে ও থুথু ছিটিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। কুশপুতুল জ্বালানোর পর সভা মঞ্চ থেকে হুশিয়ারি ছেড়ে মনিশংকর মন্ডল বলেন দল নির্দেশ দিলে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক ঘেরাও-এরও হুশিয়ারি দেন তিনি। যে ঘটনার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই নিন্দার ঝড় বইতে শুরু করে সংস্কৃতির শহর বালুরঘাট সহ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়। হিলি এসআইবি গভর্ণমেন্ট কলেজের অধ্যাপক অভিজিৎ সরকার বলেন আন্দোলনের এই ধরন অনভিপ্রেত। তিনি বলেন এই ধরন অধ্যাপক রুচিত আচরণ নয়। কোন সংগঠন আন্দোলন করতেই পারে কিন্তু সেই আন্দোলন সুষ্ঠ ও শিষ্টাচার সম্পন্ন হওয়া উচিৎ ছিল। উনার বক্তব্য প্রতিকী হলেও জুতোপেটা করা নিন্দনীয়। তৃণমূল কংগ্রেসের অধ্যাপক - শিক্ষক সংগঠনের আন্দোলনের ধরন নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন বালুরঘাটের বাসিন্দা তথা বঙ্গরত্ন কবি বিশ্বনাথ লাহা। বিশ্বনাথ লাহা বলেন এটা খুব নিন্দনীয়। তিনি বলেন আমরা বালুরঘাটকে মনে করতাম সংস্কৃতির শহর এটা, এখানকার মানুষজন সচেতন। তিনি বলেন আন্দোলনের এই ধরনকে আমরা কখনোই সমর্থন করি না, এটা নিম্নরুচির প্রদর্শন। তিনি আরও বলেন কোন বিশেষ ব্যক্তিদের জুতো দিয়ে পেটানো হচ্ছে তা মেনে নেওয়া যায় না। বর্তমানে আন্দোলনের ধরনের রুচিবোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলে ক্ষোভে ফুসছে বালুরঘাট। শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড় নয় জুতাপেটা আন্দোলনের বিরুদ্ধে পাল্টা আন্দোলনে নামার ভাবনা শুরু করে দিয়েছে বালুরঘাটের সাধারণ মানুষদের অনেকেই। তাদের বক্তব্য অধ্যাপক ড: সুকান্ত মজুমদার বালুরঘাটের ছেলে, সুতরাং বালুরঘাটের ছেলের কুশপুত্তলিকা বানিয়ে তাতে জুতোপেটা করা এটা বালুরঘাটের অপমান। অপরদিকে এহেন আন্দোলন বিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরুপ চৌধুরী বলেন যারা জুতোপেটা করেছিল তারা শিক্ষক নয়, শিক্ষক সমাজের কলঙ্ক, অসভ্য বর্বর, নিম্ন প্রজাতির কীট। তিনি বলেন তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে গোটা দক্ষিণ দিনাজপুর জুড়ে শুধু নিন্দা নয় প্রতিবাদের ঝড় বইবে।